**নওগাঁয় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র সংগঠকের উপর হামলা, তিনজন আটক**
নওগাঁয় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সংগঠক আরমান হোসেনসহ (২০) দুই শিক্ষার্থীর ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। বৃহস্পতিবার রাতে শহরের ল্যাবরেটরি বিয়াম স্কুল অ্যান্ড কলেজের সামনে এ ঘটনা ঘটে। পরে হামলাকারী হিসেবে তিনজনকে আটক করে পুলিশে দিয়েছে সেনাবাহিনী।
আরমান এবার ঢাকা কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেছেন এবং নওগাঁয় বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে নেতৃত্ব দেন। আহত অন্যজন মেহেদী হাসান (২২), নওগাঁ সরকারি কলেজে হিসাববিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী।
হামলার ঘটনায় পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা নিতে গড়িমসির অভিযোগ উঠেছে।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীদের সূত্রে জানা গেছে, গতকাল রাত ৮টার দিকে শহরের বিয়াম ল্যাবরেটরি স্কুলের সামনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কয়েকজন নেতা আড্ডা দিচ্ছিলেন। তখন কয়েকটি মোটরসাইকেলে ১৫-১৬ জন তরুণ সেখানে এসে আরমানকে আক্রমণ করে। আরমান মাটিতে লুটিয়ে পড়লে তারা তাকে ছুরি দিয়ে আঘাত করার চেষ্টা করে। অন্য শিক্ষার্থীরা আরমানকে বাঁচাতে এগিয়ে গেলে আরেক শিক্ষার্থী মেহেদী হাসানকে পেটানো হয়। এরপর হামলাকারীরা পালিয়ে যায়।
স্থানীয়রা আহত আরমান ও মেহেদীকে উদ্ধার করে নওগাঁ জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে। মেহেদীকে চিকিৎসার পর বাড়ি পাঠানো হলেও আরমানকে হাসপাতালে রাখা হয়েছে।
আরমান বলেছেন, “তারা কিছু না বলেই আমাকে মারধর শুরু করে। তারা মাথা থেকে শরীরের বিভিন্ন অংশে আমাকে আঘাত করেছে। একপর্যায়ে আমাকে অন্ধকার দিকে নিয়ে যেতে চায়। আমি বাধা দিলে তারা পকেট থেকে ছুরি বের করে আমাকে মারার চেষ্টা করে। এখন আমি খুব ভয় পাচ্ছি।”
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের আরেক নেতা ফজলে রাব্বি বলেছেন, “সেনাবাহিনী দ্রুত ব্যবস্থা নিলেও পুলিশ আটককৃতদের নিয়ে থানায় বসে ‘সেটেলমেন্ট’ করার চেষ্টা করছে। তবে তারা যতই চেষ্টা করুক, হামলাকারীদের ছাড় দেওয়া হবে না। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সব হামলাকারীকে আইনের আওতায় না আনলে আমরা বৃহৎ আন্দোলন করব।”
সদর থানার পরিদর্শক আবদুল আজিজ প্রথম আলোকে বলেন, “গতকাল রাতে শিক্ষার্থীদের একপক্ষ অন্য পক্ষের ওপর হামলা করে। দু’পক্ষই নিজেদের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সংগঠক দাবি করছে। হামলার ঘটনায় সেনাবাহিনী তিনজনকে আটক করে পুলিশে দিয়েছে। তারা নওগাঁ কলেজের শিক্ষার্থী। আমরা মামলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছি।”
মামলা নিতে গড়িমসির অভিযোগের বিষয়ে পরিদর্শক আজিজ বলেন, “এই অভিযোগের কোনো ভিত্তি নেই। মামলা করার ব্যক্তি আহত হওয়ায় তিনি তাৎক্ষণিক লিখিত অভিযোগ করতে পারেননি। আজ শুক্রবার আহত শিক্ষার্থী আরমানের লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পর আটক তিনজনকে গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।”